বর্ষায় ঝর্ণায় যেতে যা জানা জরুরি

ভ্রমণ একটি অদ্ভুত নেশা। আর পাহাড়ি ঝর্ণায় যাওয়ার কথা যদি থাকে, তাহলে তো এমন ভ্রমণ পিপাসুদের মন নেচে ওঠে। বেশিরভাগ পর্যটক শত বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও ঝর্ণায় চলে যান। আর বর্ষার সময়ই ঝর্ণার আসল রূপ ফুটে ওঠে। এগুলোতে সারা বছর কম-বেশি পানিপ্রবাহ থাকলেও বৃষ্টির পর বাঁধভাঙ্গা আনন্দে বয়ে চলে তীব্র স্রোতধারা।

তবে বর্ষায় ঝর্ণায় যাওয়ার আগে থাকে একটু বিশেষ প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন। দেখে নিন পূর্বপ্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত :

১. যেখানে যাবেন সে জায়গাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়ার চেষ্টা করুন। গুগল কিংবা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারলেই পেয়ে যাবেন অনেক তথ্য।

২. দলবেঁধে ভ্রমণ করুন। ঝর্ণায় একা ভ্রমণে নানা ধরনের বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন। চুরি-ডাকাতির ভয় ছাড়াও রয়েছে পাথুরে রাস্তায় বা ঝর্ণায় যেকোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কা। একা হলে ভীষণ বিপদে পড়ে যেতে পারেন।

৩. বর্ষাকালে পাতলা ওয়াটার প্রুফ ও ভালো মানের ট্রাভেল ব্যাগ নির্বাচন করতে হবে। এ সময় কখনো হ্যান্ডব্যাগ, পার্স, কাপড়ের ব্যাগ কিংবা লাগেজ নেয়া ঠিক হবে না। ছোট পানিনিরোধী ব্যাকপ্যাক নিন। শুকনো কিছু খাবার, গামছা, আর সাথে থাকা মূল্যবান দ্রব্যাদি একটা ড্রাই ব্যাগে পুরে ব্যাকপ্যাকে নিয়ে নিন। বাড়তি জিনিসপত্র বা শুকনা কাপড় ট্রেইল শুরুর মুখে কোনো চায়ের দোকানে রেখে যেতে পারেন।

৪. ঝর্ণায় ভ্রমণের সময় জুতা নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তা না হলে পিছলে পড়ে ভ্রমণটাই মাঠে মারা যাবে। বিশেষ করে ঝর্ণায় যাওয়ার আগে গ্রিপওয়ালা ভালো জুতা পরে যান। নারীরা হাই হিল পরে ভ্রমণ করবেন না।

৫. যেহেতু বর্ষাকালে ভ্রমণ করবেন, সেহেতু পাতলা ও দ্রুত শুকিয়ে যায় এমন কাপড় নেয়ার চেষ্টা করুন। ফুলহাতা শার্ট, মোটা জিন্স, লেহেঙ্গার মতো ভারী পোশাক না পরাই ভালো।

৬. ভ্রমণে গেলে অবশ্যই ওষুধের বাক্স সাথে নিতে হবে।

৭. অতিরিক্ত বৃষ্টি থেকে বাঁচতে সাথে রাখতে পারেন রেইন কোট বা ছাতা।

৮. দক্ষ গাইড বা স্থানীয় কাউকে দলে রাখুন। যেকোনো বিরূপ পরিস্থিতির উদ্ভব হলে গাইড বা স্থানীয় কেউ সাথে থাকলে বিপদের আশঙ্কা কমে যাবে।

৯. বৃষ্টি বেশি হলে ঝর্ণার পানি বেড়ে যায় এবং তাতে ভীষণ স্রোত থাকে। তখন ঝর্ণায় পারাপার কষ্টকর হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে দলবেঁধে ঝিরি পার হন। সাথে রাখতে পারেন কিছুটা দড়ি, যা নির্বিঘ্নে ঝিরি পারাপারে সাহায্য করবে।

১০. হড়কা বানের সম্ভাবনা দেখলে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে নিন; পানি কমা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। পাহাড়ি ঢল সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং বর্ষাকালে তাঁবু না করাই ভালো।

১১. পথে আমাদের সাথে থাকে নানা রকম শুকনা খাবার বা চকলেট। সেগুলোর খোসা যত্রতত্র ফেলে পরিবেশ নোংরা না করে সাথে করে নিয়ে আসা ভালো।

১২. স্থানীয়দের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। অযথা চিৎকার করে বা উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে পরিবেশ দূষণ করবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *